• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

পাল্লাহু । pAllahu

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম-এর বাংলা ব্লগ

  • পাল্লাব্লগ
  • চুতরাপাতা
  • মহাউন্মাদ
  • ধর্মকারী
  • রেফারেন্স
  • ট্যাগস

কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ: মক্কা অধ্যায় – গোপন প্রচারের তিন বছর (পর্ব ০৬)

You are here: Home / ধর্মকারী / কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ: মক্কা অধ্যায় – গোপন প্রচারের তিন বছর (পর্ব ০৬)
July 28, 2016
লিখেছেন নরসুন্দর মানুষ
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫
{মানুষের জীবনযাপন বোঝার সহজ উপায় হচ্ছে তার শহরের প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশ নিরীক্ষণ করা; মক্কার চারপাশটা যদি ঘুরে দেখা সম্ভব হয়, সেক্ষেত্রে নবী জীবনের অনেক ঘটনার লৌকিক ব্যাখ্যা করা সম্ভব; সেই সুযোগ আমার হয়েছে, মক্কা লাইব্রেরীর কিউরেটর আমার গাইড ছিলেন! 
আসুন, সংক্ষেপে আজ মক্কা চেনা শুরু করি; গত পর্বের ছবিটির সাথে এই পর্বের ছবিটি ডাউনলোড করে জুম করে সিরিয়াল অনুসারে দেখতে থাকুন।
৫৫৫০ x ২৮১০ রেজলুশনের মূল ছবিটির ডাউনলোড লিংক (৩ মেগাবাইট)
১: এটি মুহাম্মদের জন্মস্থান; ২৪ বছর বয়স পর্যন্ত মুহাম্মদ এখানেই ছিলেন; বড় হলুদ বৃত্তটি মুহাম্মদের বানু হাশিম গোত্রের এলাকা; বানু হাশিম গোত্রের ১০ টি উপগোত্র ছিল; এটি মক্কা শহরের পূর্বের সীমা।
২: এই অংশে ছিল খাদিজার বাসা, মুহাম্মদ ২৫ থেকে ৫৩ বছর বয়স পর্যন্ত এই বাড়িতেই ছিলেন; মুহাম্মদের চাচা আবু লাহাব (আব্দুল উজ্জা) ছিলেন খাদিজার প্রতিবেশী; তাদের দুজনের বাড়ির দেওয়াল একসাথে সংযুক্ত ছিল।
৩: এটি সাফা পাহাড়ের চূড়া (উচ্চতা প্রায় ৫০ ফুট); এর ওপর থেকেই মুহাম্মদ জনসমুক্ষে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। সাফা কাবা থেকে ৩৩০ ফুট দূরত্বে অবস্থিত।
৪: এটি মারওয়া পাহাড়ের চূড়া (মারওয়া-কে পাহাড় না বলে উঁচু টিলা বলা যুক্তিযুক্ত); এর পাশেই ছিল জাবির নামে এক কর্মকারের দোকান; মুহাম্মদ এখানে সময় কাটাতেন মাঝে মধ্যেই। ৩ এবং ৪ এর মাঝের দূরত্ব প্রায় ১২০০ ফুট। মারওয়া কাবা থেকে ১১০০ ফুট দূরত্বে অবস্থিত।
৫: এই অংশে বাস করতেন মুহাম্মদের পারিবারিক চাচা আবু জেহেল (উমার ইবনে হিশাম/ আবু হাকাম); মুহাম্মদ বদর যুদ্ধের সময় তাঁকে মুসলমানদের ফেরাউন বলেছিলেন।
৬: সাফা পাহাড়ের পাদদেশের এই অংশে ছিল আরকাম-এর বাসা, এই বাসাকে মুহাম্মদ তাঁর অনুসারীদের নিয়ে আলোচনা আর ইসলাম প্রচারের কেন্দ্র হিসেবে তৈরি করেছিলেন ৬১৪ সাল থেকে।
৭: মুহাম্মদের চাচা আব্বাস ঠিক এই অংশে বাস করতেন।
৮: এটি জমজম কুপের অবস্থান এলাকা।
৯: এটি নবী মুহাম্মদের প্রথম প্রেম এবং মেরাজ নামক গল্প তৈরির স্থান – মানে উম্মে হানির বসবাসের স্থান।
১০: এটি নবী মুহাম্মদের একমাত্র বন্ধু, পরামর্শক, শ্বশুর আবু বকর-এর বাসস্থানের এলাকা; মুহাম্মদ প্রতিদিন একবার অবশ্যই এখানে আসতেন; এটি মক্কা শহরের পশ্চিম সীমার শেষ অংশ বলতে পারেন; ১ থেকে ১০ এর দূরত্ব এক মাইলের একটু বেশি; বলতে পারেন দেড় কিলোমিটার।
১১: এটি জান্নাতুল মালা কবরস্থান; মক্কা থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান; এখানে মুহাম্মদদের দাদা, চাচা, সন্তান এবং খাদিজার কবর আছে। হেঁটে হেঁটে হেরা গুহায় যেতে হলে জান্নাতুল মালা কবরস্থানের পাশ দিয়েই যেতে হয়।
১২: এটি হেরা গুহার পাহাড় (জবলে নূর); হেরা-কে গুহা বলা আর বেড়ালকে বাঘ বলা একই কথা। এর আকার (১২ বাই ৫১/৪ বাই ৭) বর্গফুট মাত্র; এখান থেকে মক্কা শহরকে দেখা যায়। এর অবস্থান মক্কা থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে। মুহাম্মদ তার প্রথম সন্তানের মৃত্যু; মক্কা ডুবিয়ে-দেওয়া বন্যা, আলীকে প্রতিপালনের জন্য নিয়ে আসা আর কাবা পুননির্মাণের সময় থেকে হেরায় নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন। এ সময় মুহাম্মদের বয়স ছিল ৩৫।
১৩: এটি মিনা এলাকা; এর অবস্থান মক্কা থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্বে। এখানে শয়তানকে পাথর মারার প্রথা পালন করা হয়। চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার মিথ জন্ম নেয় এখান থেকেই।
মক্কা, মাত্র দেড় কিলোমিটারে ঘুরপাক খাওয়া একটি শহর; জনসংখ্যা ১৫০০ থেকে ২০০০ জনের মধ্যে; পানির সহজলভ্যতা এই শহরকে লম্বা মরুভূমি যাত্রার বিশ্রামস্থল হিসেবে বাড়তে সাহায্য করেছে; তার সাথে বেদুঈন আর হিজাজের শতাধিক গোত্রের বিনোদন ও ধর্ম পালনের স্থান হিসেবে গড়ে ওঠে মক্কা। মুহাম্মদের ইসলাম প্রচার ৬১০ থেকে ৬২০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই দেড় কিলোমিটারেই বৃত্তবন্দী থেকেছে; কুরাইশদের ভুল সিদ্ধান্ত আর মুহাম্মদের দূরদর্শিতা ৬২০ সালের পর থেকে ইসলামকে খোলা ময়দানে নিয়ে আসে; যার সুফল আজও ভোগ করছে সামান্য কয়েকজন, আর তার কুফলের যন্ত্রণা ভোগ করছে পুরো পৃথিবী!
বর্তমান মক্কা শহরটা চেনা হলো আজ; কিন্তু মুহাম্মদের সময় কেমন ছিলো মক্কার চেহারা; এই ধারাবাহিকের ৮ম পর্ব থেকেই মুহাম্মদ সাফা পাহাড়ে উঠে মক্কাবাসীদের সাবধান করা শুরু করবেন; আমরাও ঠিক সাফা চূড়ায় উঠে দেখবো, মুহাম্মদ কেমন দেখেছিলেন তাঁর সময়ের শহরটিকে!
কোরআন অবতীর্ণ হবার ধারাবাহিকতা অনুসারে প্রকাশের আজ ৬ষ্ঠ পর্ব; এই পর্বে থাকছে গোপন প্রচারের তিন বছরের শেষ পাঁচ অংশ। অনুবাদের ভাষা ৫০ টির বেশি বাংলা/ইংরেজি অনুবাদ অনুসারে নিজস্ব।}
নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৩১ তম প্রকাশ; সূরা আল ফাতিহা (১) (সূচনা) ৭ আয়াত:
১. শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু। 
২. যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি সকল সৃষ্টিজগতের পালনকর্তা। 
৩. যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। 
৪. যিনি বিচার দিনের মালিক। 
৫. আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। 
৬. আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, 
৭. সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। 
নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৩২ তম প্রকাশ; সূরা আল আদিয়াত (১০০) (অভিযানকারী) ১১ আয়াত:
১. শপথ ঊর্ধ্বশ্বাসে চলমান অশ্বসমূহের, 
২. অতঃপর ক্ষুরাঘাতে অগ্নিবিচ্ছুরক অশ্বসমূহের 
৩. অতঃপর প্রভাতকালে আক্রমণকারী অশ্বসমূহের 
৪. ও যারা সে সময়ে ধুলি উৎক্ষিপ্ত করে 
৫. অতঃপর যারা শক্রদলের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে – 
৬. নিশ্চয় মানুষ তার পালনকর্তার প্রতি অকৃতজ্ঞ। 
৭. এবং সে অবশ্য এ বিষয়ে অবহিত 
৮. এবং সে নিশ্চিতই ধন-সম্পদের ভালবাসায় মত্ত। 
৯. সে কি জানে না, যখন কবরে যা আছে, তা উত্থিত হবে 
১০. এবং অন্তরে যা আছে, তা অর্জন করা হবে? 
১১. সেদিন তাদের কী হবে, সে সম্পর্কে তাদের পালনকর্তা সবিশেষ জ্ঞাত। 
নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৩৩ তম প্রকাশ; সূরা আল হাক্কাহ (৬৯) (নিশ্চিত সত্য) ৩৭ আয়াত:
১. সুনিশ্চিত বিষয়। 
২. সুনিশ্চিত বিষয় কী? 
৩. আপনি কি কিছু জানেন, সেই সুনিশ্চিত বিষয় কী? 
৪. আদ ও সামুদ গোত্র মহাপ্রলয়কে মিথ্যা বলেছিল। 
৫. অতঃপর সমুদ গোত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রলয়ংকর বিপর্যয় দ্বারা। 
৬. এবং আদ গোত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রচণ্ড ঝঞ্জাবায়ূ, 
৭. যা তিনি প্রবাহিত করেছিলেন তাদের ওপর সাত রাত্রি ও আট দিবস পর্যন্ত অবিরাম। আপনি তাদেরকে দেখতেন যে, তারা অসার খর্জুর কাণ্ডের ন্যায় ভূপাতিত হয়ে রয়েছে। 
৮. আপনি তাদের কোনো অস্তিত্ব দেখতে পান কি? 
৯. ফেরাউন, তাঁর পূর্ববর্তীরা এবং উল্টে যাওয়া বস্তিবাসীরা গুরুতর পাপ করেছিল। 
১০. তারা তাদের পালনকর্তার রসূলকে অমান্য করেছিল। ফলে তিনি তাদেরকে কঠোরহস্তে পাকড়াও করলেন। 
১১. যখন জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল, তখন আমি তোমাদেরকে চলন্ত নৌযানে আরোহণ করিয়েছিলাম। 
১২. যাতে এ ঘটনা তোমাদের জন্যে স্মৃতির বিষয় এবং কান এটাকে উপদেশ গ্রহণের উপযোগী রূপে গ্রহণ করে। 
১৩. যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে-একটি মাত্র ফুৎকার 
১৪. এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দেয়া হবে, 
১৫. সেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে। 
১৬. সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও বিক্ষিপ্ত হবে। 
১৭. এবং ফেরেশতাগণ আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ও আট জন ফেরেশতা আপনার পালনকর্তার আরশকে তাদের উর্ধ্বে বহন করবে। 
১৮. সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোনোকিছু গোপন থাকবে না। 
১৯. অতঃপর যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে, সে বলবে: নাও, তোমরাও আমলনামা পড়ে দেখ। 
২০. আমি জানতাম যে, আমাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে। 
২১. অতঃপর সে সুখী জীবন যাপন করবে, 
২২. সুউচ্চ জান্নাতে। 
২৩. তার ফলসমূহ অবনমিত থাকবে। 
২৪. বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে, তার প্রতিদানে তোমরা খাও এবং পান কর তৃপ্তি সহকারে। 
২৫. যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবে: হায় আমায় যদি আমার আমল নামা না দেয়া হতো। 
২৬. আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব! 
২৭. হায়, আমার মৃত্যুই যদি শেষ হত। 
২৮. আমার ধন-সম্পদ আমার কোনো উপকারে এলো না। 
২৯. আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেল। 
৩০. ফেরেশতাদেরকে বলা হবে: ধর, একে গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও, 
৩১. অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। 
৩২. অতঃপর তাকে শৃঙ্খলিত কর সত্তর গজ দীর্ঘ এক শিকলে। 
৩৩. নিশ্চয় সে মহান আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল না। 
৩৪. এবং মিসকীনকে আহার্য দিতে উৎসাহিত করত না। 
৩৫. অতএব, আজকের দিন এখানে তার কোনো সুহৃদ নাই। 
৩৬. এবং কোনো খাদ্য নাই, ক্ষত-নিঃসৃত পুঁজ ব্যতীত। 
৩৭. গোনাহগার ব্যতীত কেউ এটা খাবে না। 
নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৩৪ তম প্রকাশ; সূরা আন নাযিয়াত (৭৯) (প্রচেষ্টাকারী) ২৭ থেকে ৪৬ আয়াত:
২৭. তোমাদের সৃষ্টি অধিক কঠিন না আকাশের, যা তিনি নির্মাণ করেছেন? 
২৮. তিনি একে উচ্চ করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন। 
২৯. তিনি এর রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন এবং এর সূর্যোলোক প্রকাশ করেছেন। 
৩০. পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন। 
৩১. তিনি এর মধ্য থেকে এর পানি ও ঘাম নির্গত করেছেন, 
৩২. পর্বতকে তিনি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, 
৩৩. তোমাদের ও তোমাদের চতুষ্পদ জন্তুদের উপকারার্থে। 
৩৪. অতঃপর যখন মহাসংকট এসে যাবে। 
৩৫. অর্থাৎ যেদিন মানুষ তার কৃতকর্ম স্মরণ করবে 
৩৬. এবং দর্শকদের জন্যে জাহান্নাম প্রকাশ করা হবে, 
৩৭. তখন যে ব্যক্তি সীমালংঘন করেছে; 
৩৮. এবং পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, 
৩৯. তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। 
৪০. পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দণ্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশি থেকে নিজেকে নিবৃত্ত রেখেছে, 
৪১. তার ঠিকানা হবে জান্নাত। 
৪২. তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, কেয়ামত কখন হবে? 
৪৩. এর বর্ণনার সাথে আপনার কী সম্পর্ক ? 
৪৪. এর চরম জ্ঞান আপনার পালনকর্তার কাছে। 
৪৫. যে একে ভয় করে, আপনি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবেন। 
৪৬. যেদিন তারা একে দেখবে, সেদিন মনে হবে, যেন তারা দুনিয়াতে মাত্র এক সন্ধ্যা অথবা এক সকাল অবস্থান করেছে। 
নবী মুহাম্মদ দ্বারা ৩৫ তম প্রকাশ; সূরা আল ওয়াক্বিয়াহ্ (৫৬) (নিশ্চিত ঘটনা) ৮১, ৮২ বাদে ৯৬ পর্যন্ত আয়াত:
১. যখন কিয়ামতের ঘটনা ঘটবে, 
২. যার বাস্তবতায় কোনো সংশয় নেই। 
৩. এটা নিচু করে দেবে, সমুন্নত করে দেবে। 
৪. যখন প্রবলভাবে প্রকম্পিত হবে পৃথিবী। 
৫. এবং পর্বতমালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে। 
৬. অতঃপর তা হয়ে যাবে উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণা। 
৭. এবং তোমরা তিনভাবে বিভক্ত হয়ে পড়বে। 
৮. যারা ডান দিকে, কত ভাগ্যবান তারা। 
৯. এবং যারা বামদিকে, কত হতভাগা তারা। 
১০. অগ্রবর্তীগণ তো অগ্রবর্তীই। 
১১. তারাই নৈকট্যশীল, 
১২. অবদানের উদ্যানসমূহে, 
১৩. তারা একদল পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে। 
১৪. এবং অল্পসংখ্যক পরবর্তীদের মধ্যে থেকে। 
১৫. স্বর্ণখচিত সিংহাসন। 
১৬. তারা তাতে হেলান দিয়ে বসবে পরস্পর মুখোমুখি হয়ে। 
১৭. তাদের কাছে ঘোরাফেরা করবে চিরকিশোরেরা। 
১৮. পানপাত্র কুঁজা ও খাঁটি সূরাপূর্ণ পেয়ালা হাতে নিয়ে, 
১৯. যা পান করলে তাদের শিরঃপীড়া হবে না এবং তারা বিকারগ্রস্তও হবে না। 
২০. আর তাদের পছন্দমত ফলমুল নিয়ে, 
২১. এবং রুচিমত পাখির মাংস নিয়ে। 
২২. তথায় থাকবে আনতনয়না হুরগণ, 
২৩. আবরণে রক্ষিত মোতির ন্যায়, 
২৪. তারা যা কিছু করত, তার পুরস্কারস্বরূপ। 
২৫. তারা তথায় অবান্তর ও কোনো খারাপ কথা শুনবে না। 
২৬. কিন্তু শুনবে সালাম আর সালাম। 
২৭. যারা ডান দিকে থাকবে, তারা কত ভাগ্যবান। 
২৮. তারা থাকবে কাঁটাবিহীন বদরিকা বৃক্ষে। 
২৯. এবং কাঁদি কাঁদি কলায়, 
৩০. এবং দীর্ঘ ছায়ায়। 
৩১. এবং প্রবাহিত পানিতে, 
৩২. ও প্রচুর ফলমূলে, 
৩৩. যা শেষ হবার নয় এবং নিষিদ্ধও নয়, 
৩৪. আর থাকবে সমুন্নত শয্যায়। 
৩৫. আমি জান্নাতী রমণীগণকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি। 
৩৬. অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী। 
৩৭. কামিনী, সমবয়স্কা। 
৩৮. ডান দিকের লোকদের জন্যে। 
৩৯. তাদের একদল হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে। 
৪০. এবং একদল পরবর্তীদের মধ্য থেকে। 
৪১. বামপার্শ্বস্থ লোক, কত না হতভাগা তারা। 
৪২. তারা থাকবে প্রখর বাষ্পে এবং উত্তপ্ত পানিতে, 
৪৩. এবং ধুম্রকুঞ্জের ছায়ায়। 
৪৪. যা শীতল নয় এবং আরামদায়কও নয়। 
৪৫. তারা ইতিপূর্বে স্বাচ্ছন্দ্যশীল ছিল। 
৪৬. তারা সদাসর্বদা ঘোরতর পাপকর্মে ডুবে থাকত। 
৪৭. তারা বলত: আমরা যখন মরে অস্থি ও মৃত্তিকায় পরিণত হয়ে যাব, তখনও কি পুনরুত্থিত হব? 
৪৮. এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণও! 
৪৯. বলুন: পূর্ববর্তী ও পরবর্তীগণ, 
৫০. সবাই একত্রিত হবে এক নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে। 
৫১, অতঃপর হে পথভ্রষ্ট, মিথ্যারোপকারীগণ। 
৫২. তোমরা অবশ্যই ভক্ষণ করবে যাক্কুম বৃক্ষ থেকে, 
৫৩. অতঃপর তা দ্বারা উদর পূর্ণ করবে, 
৫৪. অতঃপর তার ওপর পান করবে উত্তপ্ত পানি। 
৫৫. পান করবে পিপাসিত উটের ন্যায়। 
৫৬. কেয়ামতের দিন এটাই হবে তাদের আপ্যায়ন। 
৫৭. আমি সৃষ্টি করেছি তোমাদেরকে। অতঃপর কেন তোমরা তা সত্য বলে বিশ্বাস কর না। 
৫৮. তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমাদের বীর্যপাত সম্পর্কে। 
৫৯. তোমরা তাকে সৃষ্টি কর, না আমি সৃষ্টি করি? 
৬০. আমি তোমাদের মৃত্যুকাল নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই। 
৬১. এ ব্যাপারে যে, তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের মত লোককে নিয়ে আসি এবং তোমাদেরকে এমন করে দিই, যা তোমরা জান না। 
৬২. তোমরা অবগত হয়েছ প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে, তবে তোমরা অনুধাবন কর না কেন? 
৬৩. তোমরা যে বীজ বপন কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? 
৬৪. তোমরা তাকে উৎপন্ন কর, না আমি উৎপন্নকারী? 
৬৫. আমি ইচ্ছা করলে তাকে খড়কুটো করে দিতে পারি, অতঃপর হয়ে যাবে তোমরা বিস্ময়াবিষ্ট। 
৬৬. বলবে: আমরা তো ঋণের চাপে পড়ে গেলাম; 
৬৭. বরং আমরা হৃতসর্বস্ব হয়ে পড়লাম। 
৬৮. তোমরা যে পানি পান কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? 
৬৯. তোমরা তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি বর্ষণ করি? 
৭০. আমি ইচ্ছা করলে তাকে লোনা করে দিতে পারি, অতঃপর তোমরা কেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর না? 
৭১. তোমরা যে অগ্নি প্রজ্জ্বলিত কর, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? 
৭২. তোমরা কি এর বৃক্ষ সৃষ্টি করেছ, না আমি সৃষ্টি করেছি? 
৭৩. আমি সেই বৃক্ষকে করেছি স্মরণিকা এবং মরুবাসীদের জন্য সামগ্রী। 
৭৪. অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন। 
৭৫. অতএব, আমি তারকারাজির অস্তাচলের শপথ করছি, 
৭৬. নিশ্চয় এটা এক মহা শপথ – যদি তোমরা জানতে। 
৭৭. নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন, 
৭৮. যা আছে এক গোপন কিতাবে, 
৭৯. যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে স্পর্শ করবে না। 
৮০. এটা বিশ্ব-পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। 
৮৩. অতঃপর যখন কারও প্রাণ কন্ঠাগত হয়। 
৮৪. এবং তোমরা তাকিয়ে থাক, 
৮৫. তখন আমি তোমাদের অপেক্ষা তার অধিক নিকটে থাকি; কিন্তু তোমরা দেখ না। 
৮৬. যদি তোমাদের হিসাব-কিতাব না হওয়াই ঠিক হয়, 
৮৭. তবে তোমরা এই আত্মাকে ফেরাও না কেন, যদি তোমরা সত্যবাদী হও? 
৮৮. যদি সে নৈকট্যশীলদের একজন হয়; 
৮৯. তবে তার জন্যে আছে সুখ, উত্তম রিযিক এবং নেয়ামতে ভরা উদ্যান। 
৯০. আর যদি সে ডান পার্শ্বস্থদের একজন হয়, 
৯১. তবে তাকে বলা হবে: তোমার জন্যে ডানপার্শ্বস্থদের পক্ষ থেকে সালাম। 
৯২. আর যদি সে পথভ্রষ্ট মিথ্যারোপকারীদের একজন হয়, 
৯৩. তবে তার আপ্যায়ন হবে উত্তপ্ত পানি দ্বারা। 
৯৪. এবং সে নিক্ষিপ্ত হবে অগ্নিতে। 
৯৫. এটা ধ্রুব সত্য। 
৯৬. অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন। 

আয়াত প্রকাশের মনোজগত: গোপন প্রচারের প্রায় তিন বছর সময়ে মুহাম্মদ আয়াত প্রকাশে স্বাভাবিক গতিশীলতা লাভ করেন; আর নিয়মিত বিরতিতে আয়াত প্রকাশের চর্চা, সাথে একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে প্রকাশ ও পাঠ, ভাষার জড়তা কমাতে থাকে; আয়াতের আকার বাড়তে থাকাটাই তার এই জড়তাহীনতার প্রকাশ। 
মুহাম্মদ এই সময়ে আল্লাহ, বিশ্বাস, সমর্পন (ইসলাম), বেহেস্ত, দোযখ আর মানুষের ধন-সম্পদের বিভেদ নিয়ে আয়াতের মাধ্যেমে একটি পরিষ্কার ধারণা তাঁর সল্প সংখ্যাক সাহাবীদের (অনুসারী) দিতে সমর্থ হন। সাহাবীদের অনুরোধ আর মুহাম্মদের জনসমক্ষে ইসলাম প্রচারের ইচ্ছা তাঁকে মানসিকভাবে অস্থির করে তোলে! এই অস্থিরতাই হচ্ছে এই সময়ের সবচেয়ে বড় সূরার অংশ হিসেবে (প্রায় ১৭০ লাইনের) ৩৬/৩৭/৩৮ তম প্রকাশ; যেখানে মুহাম্মদের অবচেতন (আল্লাহ/জ্রিবাইল), মুহাম্মদকেই বিভিন্ন উদাহরন দিয়ে মানসিকভাবে শক্তিশালী করতে চেষ্টা করতে থাকে। 
তার তা দিয়েই শুরু হবে আমাদের আগামী পর্ব!
(চলবে)
Category: ধর্মকারীTag: কোরানের বাণী, ছবি, রচনা
Previous Post: « নিরামিষ-অতিষ্ঠ নুহ নবী
Next Post: দ্বীনবানের দীন বাণী – ৪৫ »

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পাল্লাহু । pAllahu • ফেসবুক • পেজ • টুইটার

Return to top