লিখেছেন নরমপন্থী
একজন মহিলার লাশ পাওয়া গেছে। (গোয়েন্দগিরির এই গল্পটা এখানে বলার কারণ: এই
গল্পে একজন গোয়েন্দা তার ধর্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েছেন অজানা সত্যকে
জানার/প্রতিষ্ঠা করার জন্য আর অন্যজন ব্যবহার করেছেন স্বাভাবিক
বিজ্ঞানসম্মত পন্থা।) লাশের ময়না তদন্ত শেষ। সমস্যা হল এটা আত্মহত্যাও হতে
পারে, খুনও হতে পারে।
গল্পে একজন গোয়েন্দা তার ধর্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়েছেন অজানা সত্যকে
জানার/প্রতিষ্ঠা করার জন্য আর অন্যজন ব্যবহার করেছেন স্বাভাবিক
বিজ্ঞানসম্মত পন্থা।) লাশের ময়না তদন্ত শেষ। সমস্যা হল এটা আত্মহত্যাও হতে
পারে, খুনও হতে পারে।
গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হিসেবে মনে করুন আপনি দুইজন নবনিযুক্ত
ডিটেক্টিভকে (ন-ফিস এবং মো-ফিস কে) দু’টি ভিন্ন দলের নেতৃত্বে তদন্ত করার
দায়িত্ব দিয়েছেন। জনাব গোয়েন্দা নাফিস নাস্তিক এবং গোয়েন্দা মফিজ আস্তিক।
একটা বিষয় পরিষ্কার যে, মৃত্যুর কারণ সত্যিকার অর্থে ১০০% নিশ্চিত হওয়া
সম্ভব না। কারণ মৃত্যুর সময়কার কোনো ভিডিওটেপ পাওয়া যাবার কোন উপায় নাই।
ডিটেক্টিভকে (ন-ফিস এবং মো-ফিস কে) দু’টি ভিন্ন দলের নেতৃত্বে তদন্ত করার
দায়িত্ব দিয়েছেন। জনাব গোয়েন্দা নাফিস নাস্তিক এবং গোয়েন্দা মফিজ আস্তিক।
একটা বিষয় পরিষ্কার যে, মৃত্যুর কারণ সত্যিকার অর্থে ১০০% নিশ্চিত হওয়া
সম্ভব না। কারণ মৃত্যুর সময়কার কোনো ভিডিওটেপ পাওয়া যাবার কোন উপায় নাই।
প্রথম গোয়েন্দা জনাব ন-ফিস:
সকাল বেলা বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নতুন চাকরির উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেলেন।
বাবা বললেন ‘যাবার পথে দরবেশ বাবার কাছে দোয়া এবং পরামর্শ নিয়ে যাবি?’
তিনি কুসংস্কার মানেন না, তাই কোনো দরবেশ-টরবেশের সাথে দেখা করতে গেলেন না।
বাবা বললেন ‘যাবার পথে দরবেশ বাবার কাছে দোয়া এবং পরামর্শ নিয়ে যাবি?’
তিনি কুসংস্কার মানেন না, তাই কোনো দরবেশ-টরবেশের সাথে দেখা করতে গেলেন না।
তার কাজের প্রক্রিয়া নিম্নরূপ:
ক্রাইম সিনে পাওয়া আলামত সংগ্রহ করে তার বিচার বিশ্লেষণ। এই আলামতগুলো মৃত্যুর কারণের সাথে সম্পর্কিত হতেও পারে, না-ও হতে পারে।
ময়না তদন্ত রিপোর্ট বিস্তারিত পড়লেন।
আত্মহত্যা কিংবা হত্যাকাণ্ডের সকল সম্ভাব্য কারণ এবং মোটিভগুলো নিজ দলের
সাথে পর্যালোচনা করলেন। তার ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে অনুসন্ধান করে দেখলেন,
তার আত্মহত্যা করবার কোনো কারণ থাকতে পারে কি না।
সাথে পর্যালোচনা করলেন। তার ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে অনুসন্ধান করে দেখলেন,
তার আত্মহত্যা করবার কোনো কারণ থাকতে পারে কি না।
কয়েকজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে এবং এটা হত্যাকাণ্ড হলে তা বুঝতে
চেষ্টা করলেন এবং বিভিন্ন নিরপেক্ষ সোর্স থেকে তথ্যগুলো যাচাই করে নিলেন।
চেষ্টা করলেন এবং বিভিন্ন নিরপেক্ষ সোর্স থেকে তথ্যগুলো যাচাই করে নিলেন।
তাই বিভিন্ন আলামত এবং সম্ভাব্য আত্মহত্যার কারণ কিংবা হত্যাকান্ডের
উদ্দেশ্যের সব কিছু বিবেচনায় রেখে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য (শক্তিশালী মামলা /
গ্রহণযোগ্য গল্প) দাঁড় করানোই হল তার উদ্দেশ্য, যাতে কাউকে যুক্তিসঙ্গত
সন্দেহ সীমানা ছেড়ে (beyond the reasonable doubt) অভিযুক্ত করা যায় বা
আত্মহত্যা হলে সে সত্য উৎঘাটন করা যায়। এখানে বুঝতে হবে কোন একটা প্রমাণের
ভিত্তিতে কাউকে দোষী দাবি করেননি। তার কাজে ক্রমবর্ধমান (cumulative)
প্রমাণ যেমন হাতের ছাপ, সাক্ষীদের বক্তব্য, খুঁটিনাটি প্রমাণাদি, যাত্রার
টিকেট, টেলিফোন কলের রেকর্ড এবং এই জাতীয় যাবতীয় সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ভাবে
জোড়া লাগিয়েই তার কেইস তিনি দাড় করিয়েছেন।
উদ্দেশ্যের সব কিছু বিবেচনায় রেখে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য (শক্তিশালী মামলা /
গ্রহণযোগ্য গল্প) দাঁড় করানোই হল তার উদ্দেশ্য, যাতে কাউকে যুক্তিসঙ্গত
সন্দেহ সীমানা ছেড়ে (beyond the reasonable doubt) অভিযুক্ত করা যায় বা
আত্মহত্যা হলে সে সত্য উৎঘাটন করা যায়। এখানে বুঝতে হবে কোন একটা প্রমাণের
ভিত্তিতে কাউকে দোষী দাবি করেননি। তার কাজে ক্রমবর্ধমান (cumulative)
প্রমাণ যেমন হাতের ছাপ, সাক্ষীদের বক্তব্য, খুঁটিনাটি প্রমাণাদি, যাত্রার
টিকেট, টেলিফোন কলের রেকর্ড এবং এই জাতীয় যাবতীয় সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য ভাবে
জোড়া লাগিয়েই তার কেইস তিনি দাড় করিয়েছেন।
তিনিও সকাল বেলা বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নতুন চাকরির উদ্দেশ্যে বের হয়ে
গেলেন। তার বাবাও বললেন ‘যাবার পথে দরবেশ বাবার কাছে দোয়া এবং পরামর্শ নিয়ে
যাবি?’ তিনি কিন্তু কখনো পিতার আদেশ অমান্য করেন না। দশ বছর বয়সের অভ্যাস
তিনি ধরে রেখেছেন সফলভাবে। তাছাড়া তার বিশ্বাস, দরবেশ বাবার দোয়ার বরকতেই
তিনি চাকরিটা পেয়েছেন। তাই আগে গেলেন দরবেশ বাবার দরবারে।
গেলেন। তার বাবাও বললেন ‘যাবার পথে দরবেশ বাবার কাছে দোয়া এবং পরামর্শ নিয়ে
যাবি?’ তিনি কিন্তু কখনো পিতার আদেশ অমান্য করেন না। দশ বছর বয়সের অভ্যাস
তিনি ধরে রেখেছেন সফলভাবে। তাছাড়া তার বিশ্বাস, দরবেশ বাবার দোয়ার বরকতেই
তিনি চাকরিটা পেয়েছেন। তাই আগে গেলেন দরবেশ বাবার দরবারে।
দরবেশ বললেন, ”কী খবর তোর?”
“বাবা, আপনার দোয়ায় চাকরিটা হইসে। আজকে প্রথম কেইসের দায়িত্ব পড়ছে, একটু দোয়া করবেন।”
“কিসের কেইস পাইলি রে, পাগলা!”
“একজন মহিলার লাশ পাওয়া গেছে।”
“এইডা কোনো ব্যাপার হইল? দাঁড়া কইতাছি! হক মাওলা!“ এই বলে দরবেশ বাবা
কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে বলে দিলেন, “এইডা মার্ডার কেইস ঐ মহিলার জামাই ওরে
মারছে – যা কইয়া দিলাম!”
কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে বলে দিলেন, “এইডা মার্ডার কেইস ঐ মহিলার জামাই ওরে
মারছে – যা কইয়া দিলাম!”
বাবার কেরামতি দেখে মফিস গোয়েন্দা সাহেব তো বেজায় খুশি। তারপর হুজুর বললেন, “মারফতি হাকিকতি দরবেশী তরিকা মনে আছে তো?”
“জি হুজুর, মনে আছে – আমার ভুল হইবে না।”
মফিস সাহেব অফিসে গিয়েই তার গোয়েন্দা দলের সবাইকে বলে দিলেন, মৃত মহিলার
স্বামীকে অভিযুক্ত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করার জন্য এবং বললেন অত্যন্ত
বিশ্বস্ত সূত্রে তিনি এই সত্য জানতে পেরেছেন।
স্বামীকে অভিযুক্ত করার জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করার জন্য এবং বললেন অত্যন্ত
বিশ্বস্ত সূত্রে তিনি এই সত্য জানতে পেরেছেন।
তার অতি দায়িত্বশীল গোয়েন্দাদল দলনেতার কনফিডেন্স দেখে মুগ্ধ। তিনি তাদের কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছেন। অতি কনফিডেন্ট ব্যক্তিদের দলনেতা হিসেবে মেনে নেয়ার প্রতি মানুষের সহজাত প্রবণতা, তা
আমরা জানি। তারপরও মফিজের দলের সদস্যরা কেমন যেন ইতস্তত করতে লাগল। মফিজ
তখন দরবেশের মারফতি হাকিকতি দরবেশী তরিকা বলে দিলেন, “তোমরা এখন থেকে
সকাল-বিকাল মনে মনে জপতে থাকবে – জামাই বেটা খুনি, জামাই বেটা খুনি” যত
বেশিবার এই কথা মনে মনে বলিতে থাকবা ততই বিষয়টা তোমাদের কাছে সত্যি মনে
হবে। যদি এমন কোন প্রমাণাদি অন্য কোনো দিকে ইঙ্গিত করে তার দিকে ভুলেও নজর
দিবে না – দিলে তরিকা ভঙ্গ হবে।”
আমরা জানি। তারপরও মফিজের দলের সদস্যরা কেমন যেন ইতস্তত করতে লাগল। মফিজ
তখন দরবেশের মারফতি হাকিকতি দরবেশী তরিকা বলে দিলেন, “তোমরা এখন থেকে
সকাল-বিকাল মনে মনে জপতে থাকবে – জামাই বেটা খুনি, জামাই বেটা খুনি” যত
বেশিবার এই কথা মনে মনে বলিতে থাকবা ততই বিষয়টা তোমাদের কাছে সত্যি মনে
হবে। যদি এমন কোন প্রমাণাদি অন্য কোনো দিকে ইঙ্গিত করে তার দিকে ভুলেও নজর
দিবে না – দিলে তরিকা ভঙ্গ হবে।”
যেমন কথা তেমন কাজ। যে আলামতগুলো দ্বারা ঐ ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা
যায়, তা সংগ্রহ করলেন। বলা বাহুল্য, এই ধরনের অনুসন্ধান প্রকৃয়ায় কোন
প্রমাণ যদি ঐ ভদ্রলোককে নির্দোষ নির্দেশ করে তা তাদের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে।
তারপর ভদ্রলোককে থানায় ধরে এনে উপর্যুপরি উত্তম-মধ্যম দিয়ে অপরাধ স্বীকারে
বাধ্য করলেন।
যায়, তা সংগ্রহ করলেন। বলা বাহুল্য, এই ধরনের অনুসন্ধান প্রকৃয়ায় কোন
প্রমাণ যদি ঐ ভদ্রলোককে নির্দোষ নির্দেশ করে তা তাদের চোখ এড়িয়ে যেতে পারে।
তারপর ভদ্রলোককে থানায় ধরে এনে উপর্যুপরি উত্তম-মধ্যম দিয়ে অপরাধ স্বীকারে
বাধ্য করলেন।
তাদের তাদের তদন্ত প্রক্রিয়া এবং ফলাফল বলল। আপনি কার পাওয়া বিষয়ের সত্যতার
ওপর আস্থা আনবেন? কোনটি আপনার মতে অজানা সত্য উৎঘাটনের সঠিক প্রক্রিয়া
হওয়া উচিত বলে মনে করেন?
ওপর আস্থা আনবেন? কোনটি আপনার মতে অজানা সত্য উৎঘাটনের সঠিক প্রক্রিয়া
হওয়া উচিত বলে মনে করেন?
১. ন-ফিজ তরিকা
২. ম-ফিজ তরিকা
বলা বাহুল্য, ম-ফিস সাহেবের তরিকা ব্যবহার করলে পৃথিবীর কোনো গোয়েন্দা
সংস্থা আপনাকে চাকরি দেবে না। কোনো প্রকার অলৌকিক বিশ্বাস আপনার পৃথিবীর
কোনো ব্যবহারিক জীবনে অকল্পনীয়।
সংস্থা আপনাকে চাকরি দেবে না। কোনো প্রকার অলৌকিক বিশ্বাস আপনার পৃথিবীর
কোনো ব্যবহারিক জীবনে অকল্পনীয়।
Leave a Reply