লিখেছেন : আহমেদ তালাত তাহজীব
পাকিস্তানে সাপ্তাহিক ছুটি জুম্মাবারে নয়, রোববার।
পাকিস্তানের সরকারি টিভিতে আজান প্রচার হয় না।
পাকিস্তানের আদালত সে দেশের প্রধানমন্ত্রিকে ইম্পিচ করে!
পাকিস্তানে সদ্য মুক্তি পাওয়া বলিউডের হিন্দি সিনেমা চলে।
পাকিস্তানে অবস্থিত তীর্থস্থানে ভারতীয় হিন্দুরা যেতে পারে।
পাকিস্তানের টিভিতে লাইভ হিন্দি গান প্রচার হয়।
পাকিস্তানের পত্রিকায় বাংলাদেশের মত দৈনিক গড়ে ১০টা শিশু ধর্ষণের খবর নেই।
পাকিস্তান একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। এই হচ্ছে সেই দেশের চিত্র।
এখন আসি বাংলাদেশে,
স্বৈরাচারী বিশ্ববেহায়া লেজে হোমো এরশাদ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে ধর্মকে
ব্যবহার করে যেসব জিনিষ করেছিলো যা এরশাদ পরবর্তী কোন তথাকথিত গণতান্ত্রিক
শাসক মানে আওয়ামীলীগ বিএনপি কোন পরিবর্তন করেনি-
১) ১৯৮৮ সালে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম ঘোষণা করেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
২) সরকারিভাবে মসজিদের বিদ্যুত, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য বিল মওকুফ করেন।
৩) শুক্রবারকে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণার কারণে মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে প্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন এরশাদ।
৪) এরশাদের নির্দেশেই রেডিও এবং টেলিভিশনে সর্বপ্রথম আজান সম্প্রচার চালু
হয়েছিল। সে ধারাবাহিকতায় এখনও নামাজের আগে দেশের রাষ্ট্রীয় রেডিও-টেলিভিশনে
আজান দেয়া হয়।
৫) ইবতেদায়ী মাদ্রাসার স্বীকৃতি, সরকারি যাকাত বোর্ড ও যাকাত তহবিল গঠন, আলীয়া মাদ্রাসাগুলো এমপিও ভুক্ত করা হয় তার হুকুমে।
এখন বর্তমান আওয়ামীলীগ আবার আরো এক কাঠি সরেস,
তাদের আমলে পাঠ্যপুস্তকের চিত্রটা এইরূপ করা হয়েছে-
নবম শ্রেণির বাংলা বই ‘সাহিত্য সংকলন’ থেকে সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের
‘পালামৌ’ ও জ্ঞানদাসের ‘সুখের লাগিয়া’, ভারতচন্দ্রের ‘আমার সন্তান’, লালন
শাহের ‘সময় গেলে সাধন হবে না’, রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘স্বাধীনতা’ ও
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘সাঁকোটা দুলছে’ বাদ দিয়ে যুক্ত করা হয়েছে শাহ
মোহাম্মদ সগীরের ‘বন্দনা’, আলাওলের ‘হামদ’, আব্দুল হাকিমের ‘বঙ্গবাণী’,
গোলাম মোস্তফার ‘জীবন বিনিময়’ ও কাজী নজরুল ইসলামের ‘উমর-ফারুক’।
অষ্টম
শ্রেণির বাংলা দ্রুতপঠন আনন্দপাঠ থেকে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর
‘রামায়ণ-কাহিনি’ বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সপ্তম শ্রেণির বাংলা বই
সপ্তবর্ণাতে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘লাল ঘোড়া’ বাদ দিয়ে যুক্ত করা হয়েছে
হবীবুল্লাহ বাহারের ‘মরু ভাস্কর’। অন্যদিকে, ষষ্ঠ শ্রেণির দ্রুতপঠন
আনন্দপাঠ থেকে শরৎচন্দ্রের ‘লালু’ ও সত্যেন সেনের ‘লাল গরুটা’ এবং
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাংলাদেশের হৃদয়’ বাদ দেওয়া হয়েছে।
সকল স্বৈরাচারীই উগ্র জাতীয়তাবাদ অথবা ধর্ম অথবা উভয়ই ব্যবহার করে মসনদ পাকাপোক্ত রাখতে চায়।
তাই স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদ হটাতে এই দুইটা বিষাক্ত উপাদানের বিপরীতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হয় এবং এর কোন বিকল্প পথ নেই।
Leave a Reply