লিখেছেন : তসলিমা নাসরিন
আমি খাড়ইয়া পেশাব করি না, কোনও মেয়েরে খাড়ইয়া পেশাব করতে বলিও না। কিন্তু পুরুষ লোকে বলে, আমি নাকি মেয়েদের বইসা পেশাবের বিরুদ্ধে, আমি নাকি বইলা বেড়াই, ছেলেরা খাড়ইয়া পেশাব করে, সুতরাং মেয়েরাও পেশাব করলে যেন খাড়ইয়া করে।
খাড়ইয়া পেশাব করলে ঠ্যাঙ্গে ছিটা যাবে আমাদের। পুরুষ লোকের ঠ্যাঙ্গে ছিটা যায় না। কারণ তাদের গায়ে বাড়তি একটা দন্ড থাকে। দন্ড উঁচা কইরা ধরলে পেশাব দূরে গিয়া পড়ে।
এখন যেই কথা কওয়ার জন্য এত কথা কওয়া, সেইটা হইল, কাল এক লেডিস পেশাবখানায় গিয়া দেখি, দরজায় বিজ্ঞাপন টাঙ্গানো, বিজ্ঞাপনে লেখা — ‘মেয়েরা তোমরা দাঁড়াইয়া পেশাব কর’।
কী ব্যাপার! যে কথা না কইয়া তিন দশক ধইরা আমার কল্লা কাটা যায় অবস্থা, সেই কথা কইয়া কেউ মাইর টাইর তো দূরের কথা, দু একটা চড় থাপ্পড়ও খাচ্ছে না?
বিজ্ঞাপনে আরও লেখা, ‘মেয়েরা তোমরা দাঁড়াইয়া পেশাব কর, এখন থেইকা আর ইউটিআই-এর ভয় করতে হবে না, গান্ধা টয়লেটের সিট মুছতেও হবে না, সিটে পাছা না লাগাইয়া স্কোয়াট করতে হবে না। এক প্যাকেট পীবাডি কিন্যা ফালাও, মুসিবত দূর কর।’
এখন থেকে মেয়েরা নিজেদের লেডিস ব্যাগেই পীবাডি নিয়া ঘুরবে। আর, পেশাব পাইলে টয়লেটে গিয়া সোজা খাড়ইয়া পেশাব করবে। যে দন্ডওয়ালারা মেয়েদের খাড়ইয়া পেশাবের বিরুদ্ধে, তাদের গান্ধা মুখে ফুল চন্দন থুরি মেয়েদের পীবাডির পিওর পেচ্ছাব গিয়া পড়ুক।
Leave a Reply