লিখেছেন : কবিতা রায়
হিন্দু গুরুছাগলের দল (গরুছাগল নয়) প্রথমেই জানতে চাইবে, রক্ত দেখিয়া কি দেবতা আনন্দ লাভ করেন?
অবশ্যই করেন। এই সৃষ্টিকর্তা দেবতাটি যেইই হোন না কেন, তাঁর অস্তিত্বের যত না প্রমাণ আছে তার চেয়েও অনেক বেশি প্রমাণ আছে যে রক্তপাত তিনি অতি পছন্দ করেন। জগতে প্রায় প্রত্যেকটি প্রাণীকেই তিনি এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যে অন্যের খাদ্য কেড়ে না খেয়ে বা অন্যের রক্তপাত না করে বেঁচে থাকাটাই অসম্ভব। প্রাণিজগতে মশা থেকে ডাইনোসর অবধি প্রত্যেকেই বাঁচার জন্য বাধ্য হয়ে অন্যের রক্তপাত করত, করছে এবং চিরকালই করবে। কারণ তাদের সৃষ্টি যে দেবতাই করুক সেটা এইভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে। মানবজাতি সৃষ্টি হবার কয়েক কোটি বছর আগে থেকেই এই রক্তপাত দেখেও সে দেবতার মনে নতুন কোনো ডিজাইন সৃষ্টির ইচ্ছা জাগেনি। আগামী দিনে তিনি সেরকম কিছু সৃষ্টি করবেন এমন একটা কথাও জগতের কোনো ধর্মের গ্রন্থে পাওয়া যাবেনা।
৪২০০ ধর্ম আর তার লাখ লাখ উপদেশের মধ্যে একটাতেও হিংসা এবং রক্তপাত না করে নিজের খাদ্য নিজে বানিয়ে নেবার উপায় জানানো হয়নি। যেসব স্বঘোষিত অবতারেরা নিজেদের ভগবান বলেন অথবা যেসব সিদ্ধ গরুরা ভগবানের সাথে দিনে দশবার মিটিং করেন তাঁরাও এরকম কোনো উপায় জানাতে পারবেন না।
ভিন্ন প্রজাতির এবং নিজ প্রজাতির মধ্যেও সংগ্রাম একটা বাস্তব বৈজ্ঞানিক সত্য। পৃথিবীর এই সংগ্রামের পরিবেশে টিকে থাকতে গেলে তাই রক্তপাত করতেই হবে। যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতেই হবে। আজ যে গরুছাগলের দল অহিংসার বাণী দেয় তাদের পূর্বজরা এভাবেই টিকে ছিল। এখনো তাদের দেশের সেনাবাহিনী বন্দুক হাতে সীমান্তে পাহারায় আছে বলেই তারা এইসব বচন দেবার জন্য বেঁচে আছে। শুধু সীমান্তের সেনাবাহিনীই নয়, তাদের দেহের প্রত্যেকটা জীবিত কোষই প্রতি সেকেন্ডে বাইরে থেকে ঢুকে পড়া হাজার হাজার শত্রুজীবকে খতম করে চলেছে বলেই ওরা চলেফিরে বেড়াতে পারছে। যতবড় অহিংস জীবই হোক, বাঁচার জন্য সে এভাবেই শত্রু মারতে বাধ্য। যে দেবতাই বানিয়ে থাকুক, ডিজাইনটা এরকমই। শত্রুর সামনে অহিংস হওয়া মানে এই পৃথিবী থেকে লুপ্ত হয়ে যাওয়া।
গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাবের আগে অহিংসার মহামারী ছড়ায়নি, আর সেই মহামারী ছড়িয়ে পড়ার আগে আলেকজান্ডারের মতো মহাবীরও ভারতের সীমা পার হয়ে ঢুকতে সাহস পায়নি। ঠিক যেভাবে হাই ইমিউনিটির জীবের দেহে রোগজীবাণু ঢুকতে পারেনা। সেই ভারতেই বুদ্ধের অহিংসা প্রচারিত হবার পর শক হূণ পাঠান মোগল ইংরেজ এসে কী করে গেছে সকলেই জানে।
Leave a Reply