লিখেছেন : কবিতা রায়
বংশটা ছিল পার্শী। পড়াশুনা ইংরেজের কাছে। চাকরি আবদুল্লার কোম্পানীতে। তারপর মোহনদাস গান্ধী হিন্দুদের অবতার হয়ে গেলেন। অথচ দলিত নেতা আম্বেদকর সারাজীবনে মিস্টার গান্ধী ছাড়া আর কিছু বলতেন না। জিন্নাকে মোহনদাস চিঠি লিখতেন ডিয়ার ব্রাদার বলে, তার জবাব দেবার সময়ে জিন্না লিখতেন ডিয়ার মিস্টার গান্ধী। বাপুজী কিম্বা মহাত্মাজী বলত কেবল হিন্দুগুলোই।
হরিজনদের অচ্ছুত বলার বিরুদ্ধে গান্ধীর একটা লেখা বেরিয়েছিল। সেখানে তিনি বলেছিলেন এই পাপের জন্য একদিন ঈশ্বর ভয়ানক শাস্তি দেবেন। এর কিছুদিন পরেই মুঙ্গেরে এক বিরাট ভূমিকম্পে প্রচুর মানুষ মারা গেল। গান্ধী অমনি ময়দানে নেমে পড়লেন; দেখো, আমার কথা মিলে গেল তো? পাপের শাস্তি দেখলে তো? এরপর আমার কথা না শুনলে আরো বিপদ আসছে।
গান্ধীকে মহাত্মা খেতাব দেওয়া রবীন্দ্রনাথ এই আজব কান্ড দেখে হতবাক হয়ে গেলেন। গান্ধীকে এক চিঠিতে তিনি লিখলেন একজন বিলেত ফেরত শিক্ষিত ব্যক্তি হয়ে এভাবে মানুষের কুসংস্কার বাড়ানোটা উচিত হচ্ছেনা। ভূমিকম্পের বৈজ্ঞানিক কারণ আছে, তার সঙ্গে পাপ-পুণ্যের সম্পর্ক নেই তা আপনি ভালই জানেন।
জবাবে গান্ধী লিখলেনঃ গুরুদেব, আপনি যা বলেছেন তা ঠিকই বলেছেন। কিন্তু আমার পক্ষে আর পিছিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
অর্থাৎ সততার প্রতীক নামে পরিচিত গান্ধী বলতে চাইছেন যে যুক্তি-বিজ্ঞান দিয়ে বোঝালে লোকে শুনছিল না। এখন আমার কথা না শুনলে ভগবান শাস্তি দেবে এটা প্রচার হওয়াতে ভাল কাজ হয়েছে। অতএব আমি মিথ্যাটাই চালু রাখব। এতেই লোকে আমার সব কথা শুনবে।
এইভাবেই গান্ধী অবতার হয়েছিলেন। এইজন্যই লোকে ওনার পিছনে লাইন দিত।
নেতাজী লিখেছেনঃ গান্ধীজীর আশ্রমে বাস করা, মাটিতে বসে কাজ করা, লেংটি পরে ঘোরা, ধর্মীয় প্রবচন দেওয়া ইত্যাদির কারণে লোকে ওনার ভক্ত। এছাড়া নেতা হবার মতো কোনো রাজনৈতিক গুণ ওনার নেই, বরং এই ব্যাপারে তিনি চিরকালই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর দেশের ক্ষতি করেছেন। ইউরোপের মতো কোনো উন্নত দেশে জন্মালে ওনাকে উন্মাদ অথবা দেশদ্রোহী বলা হত।
Leave a Reply