লিখেছেন : কবিতা রায়
ভারতের জাতির পিতা হলেন মোহনদাস গান্ধী। তিনি বিলাত থেকে ডিগ্রি নিয়ে ভারতে ফিরে আসার আগে ভারতীয় বলে কোনো জাতিই ছিল না। বিবেকানন্দ যখন মুচি-মেথর-চন্ডালকে ভাই বলে ডেকেছিলেন সেদিনও ভারতীয় বলে কোনো জাতি তৈরি হয়নি। মোহনদাস গান্ধী যেদিন জিন্নাকে ব্রাদার বলে ডাকলেন, সেদিনই ভারতীয় নেশনের সৃষ্টি হয়েছিল। সেইদিনই পাকিস্তান নেশনেরও সৃষ্টি হয়েছিল।
ভারত ভাগ হয়ে যখন পাকিস্তান হল তখন ব্রিটিশ ভারতের সম্পত্তিও ভাগ হয়েছিল। পাকিস্তানের ভাগে পড়েছিল ৭৫ কোটি টাকা। এই টাকার প্রথম কিস্তি ২০ কোটি হাতে পেয়েই পাকিস্তানের সরকার গুলিবারুদ কিনে সীমান্তের জঙ্গী দলগুলোর হাতে বিলি করে দিল, আর তারাও অস্ত্র পাওয়ামাত্র ভারতের উপর আক্রমণ করে বসল। এই অবস্থায় ভারত সরকার পাকিস্তানকে আর টাকাপয়সা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।
পাকিস্তানকে আর টাকা দেওয়া হবেনা শুনে ভারতের জাতীর পিতা গান্ধী অনশনে বসলেন। টাকা আদায় করে পাকিস্তানকে দিয়ে তবেই ছাড়লেন। টাকার অভাবে পাকিস্তানের জঙ্গীরা যদি অনাহারে মারা যায় সেটা কি অহিংসার অবতার সহ্য করতে পারেন?
স্বাধীন ভারতে গান্ধী আরেকটি অনশন করেছিলেন বিড়লা হাউসে বসে। ডিসেম্বরের ঘোর শীতে বৃষ্টির কারণে দিল্লির একটি খালি মসজিদে কিছু সর্বহারা উদবাস্তু হিন্দু পরিবার মাথা বাঁচাতে ঢুকে পড়েছিল। ব্যাপারটা অহিংসার অবতারের সহ্য হয়নি। তিনি ভারত সরকারকে অনশনের হুমকি দিয়ে পুলিশ পাঠালেন। পুলিশ গিয়ে বুড়ো-বাচ্চা-অসুস্থ-আধমরা মানুষগুলোকে ঘাড় ধরে শীতের বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় বের করে দিল। তারা রাস্তায় বসে ভিজছে সেই খবর পেয়ে তবে গান্ধী মুখে খাবার তুললেন। সেই শীতের বৃষ্টিতে ভিজে লোকগুলোর অর্ধেকই কয়েকদিনের মধ্যে মারা গেছিল। যেহেতু ওরা পাকিস্তানী জঙ্গী ছিলনা তাই সরকার তাদের কোনো সাহায্য করেনি।
এই সামান্য কাজটুকু করেই অহিংসার অবতার থামলেন না। একদল কাফের মসজিদে ঢুকেছে, সেও আবার বউবাচ্চা নিয়ে, এই মহাপাপের উপযুক্ত বদলা গান্ধী নিয়েছিলেন, মন্দিরে মন্দিরে গিয়ে কোরান পাঠের আসর বসিয়েছিলেন। কাজটা তিনি আদৌ অহিংস উপায়ে করতেন না, কেউ বাধা দেবার চেষ্টা করলে পুলিশ ডেকে তাকে লাঠিপেটা করে তাড়াতেন। এমনটাই ছিলেন আমাদের জাতির পিতা। তিনি নেতাজীকে উচ্ছন্নে যাওয়া বকাটে ছেলে বলতেন, তিনি শহীদ উধম সিং কে উন্মাদ বলতেন। তিনি জিন্নাকে ব্রাদার আর সোরাবর্দীকে ফ্রেন্ড বলতেন।
Leave a Reply