লিখেছেন : কবিতা রায়
ভারতের স্বাধীনতায় নেহেরুর অবদান নিয়ে একটা মহাভারত লেখা সম্ভব। ১৯৩৯ সালে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে সুভাষ বসু দেখলেন ইংরেজ যুদ্ধের কারণে খুবই বিপদে আছে, তাই এই সময়ে আক্রমণ করলে খুব সহজেই ভারতকে স্বাধীন করা যাবে।
পরিকল্পনা শুনেই গান্ধী আর নেহেরু একেবারে কেঁদে ফেললেন। বললেন, ইংরেজের বিপদের দিনে এরকম অসভ্য ব্যবহার উচিত নয়। বিপদে ওদেরকে সাহায্য করা দরকার। এই আজব তত্ব মানতে না চাওয়ায় সুভাষ বসুকে কংগ্রেস থেকে তাড়ানো হল। এরপর সুভাষ বিদেশে চলে গেলেন।
আজাদ হিন্দ ফৌজ নিয়ে সুভাষ বসু যখন ভারতের সীমান্তে এসে গেছেন তখন অহিংসাবাদী কংগ্রেসের নেতা নেহেরু আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে এক চিঠি লিখেছিলেন। তিনি আবেদন করেছিলেন, আমেরিকা যেন সিঙ্গাপুরে অবস্থিত আজাদ হিন্দ সরকারের উপর আক্রমণ চালিয়ে ভারতকে রক্ষা করেন। সেটি না পারলে অন্তত যেন সুভাষকে আটকাতে কংগ্রেসকে কিছু অস্ত্র পাঠিয়ে দেন। আমেরিকা অবশ্য পাত্তা দেয়নি, কারণ এলাকাটা রাশিয়ার খুব কাছে ছিল।
যুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর আজাদ হিন্দ বাহিনীকেও বন্দী করে ভারতে আনা হয়। যদিও জন-আন্দোলনের চাপে তাদের শাস্তি দেওয়া যায়নি। কিন্তু তারা যুদ্ধাপরাধী হিসাবেই ছিল। ইংরেজের হাত থেকে ক্ষমতা ভিক্ষা নেওয়া নেহেরু এই সৈন্যদেরভারতীয় সেনায় গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিল। এমনকি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পেনশনেও এদের জন্য কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। নেহেরু মুখে পেনশন দেবার কথা বললেও বাস্তবে দেওয়া হয়নি। ইন্দিরা ক্ষমতায় এসে আজাদ হিন্দ সিপাহিদের জন্য পেনশন চালু করেছিলেন।
এবারে আসল যুদ্ধাপরাধীর ইতিহাসটা দেখা দরকার। যুদ্ধ শেষে ভারতের ভাইসরয় পদে বসেন মাউন্টব্যাটেন। ইনিই সেই ব্যক্তি যিনি যুদ্ধের সময় সিঙ্গাপুর জোনের জেনারেল ছিলেন। ইনিই আজাদ হিন্দ বাহিনীকে পরাজিত এবং বন্দী করেছিলেন। ইনিই বন্দী সেনাদের মধ্যে প্রায় ৩ হাজারকে মেশিনগান চালিয়ে খুন করেছিলেন। ইনিই সিঙ্গাপুর দখলের পর আজাদ হিন্দ সরকারের শহীদ মিনার ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ওয়ার ক্রাইমের তালিকার অন্যতম তিনটি হলঃ
plunder of public or private property
wanton destruction of cities, towns or villages
devastation not justified by military necessity
এই মহান যুদ্ধাপরাধী মাউন্টব্যাটেনই ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হবার পরে নেহেরুর সরকারের গভর্নর জেনারেল হিসাবে বহাল ছিলেন। শুধু তাই নয়, ভারতের স্বাধীনতার দিন হিসাবে যে ১৫ আগস্ট তারিখটি নেওয়া হয়েছিল সেটিও ছিল জাপানের পরাজয় দিবস তথা এই মাউন্টব্যাটেনের বিজয় দিবস।
এই মহান যুদ্ধাপরাধী মাউন্টব্যাটেনেরই ইচ্ছানুসারে ভারতের সংবিধান লেখার দায়িত্ব আম্বেদকরকে দেওয়া হয়। যে আম্বেদকর বলতেন ব্রিটিশেরা ভারত ছেড়ে চলে যাওয়া মানে Great disaster হবে।
Leave a Reply