লিখেছেন : কবিতা রায়
ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলটা ইংরেজরা বানিয়ে দিয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয়দের সাহায্যে ভারতীয়দের উপর রাজত্ব করা। গান্ধীর অহিংসাবাদ কোনো নতুন আবিষ্কার ছিল না। ভারতে সহিংস বিদ্রোহ বন্ধ করাটা কংগ্রেসেরই কাজ ছিল। এই উদ্দেশ্যেই দলটা তৈরি হয়েছিল এবং ইংরেজরা চেয়েছিল সর্বভারতীয় দল হিসাবে শুধুমাত্র কংগ্রেসই থাকবে। তারাই ভারতে ইংরেজ রাজত্ব যতটা সম্ভব বেশিদিন টিকিয়ে রাখবে। তার বিনিময়ে ইংরেজরা ভারত ছেড়ে যাবার সময়ে কংগ্রেসকেই ক্ষমতায় বসিয়ে যাবে, যাতে বাইরে থেকে সরকারটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
শুরুর দিকের নেতাদের নিয়ে এইভাবে চললেও পরে যখন কংগ্রেসে নতুন মুখ আসতে শুরু করল তখন তাদেরকে এত সহজে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব ছিলনা। তাই এই ধরণের চরমপন্থী সদস্যরা যাতে কোনোভাবেই নেতার আসন না পায় সেটা নিশ্চিত করতে কংগ্রেসের প্রাচীন নেতারা ইংরেজের সাথে মিলেমিশে ফন্দি করে গান্ধীকে ভারতে আমদানি করলেন। মতিলাল নেহেরু গান্ধীকে দেশজোড়া পরিচিত দিলেন। তারপর জওহরলাল নেহেরু কংগ্রেসের সভাপতি হয়েই প্রকাশ্যে ঘোষণা করলেন “কংগ্রেস আর গান্ধী সমার্থক, গান্ধীবাদই হবে কংগ্রেসের একমাত্র পথ।” গান্ধীবাদ মানে ইংরেজের কোনোরকম ক্ষতি না করে আন্দোলন। যেটা আসলে কংগ্রেসের ওরফে ইংরেজদেরই শেখানো পদ্ধতি।
এইভাবেই জালিয়ানওয়ালাবাগের গণহত্যার কথা গান্ধী চেপে দিতে চেয়েছিলেন। কলকাতায় বসে রবীন্দ্রনাথ এই ঘটনার কথা জানতে পারেন তিনমাস পর। এইভাবেই নেতাজীকে কংগ্রেস থেকে তাড়ানো হয়েছিল কারণ তিনি এইরকম নাটকের আন্দোলন না করে আসল যুদ্ধ করতে চাইতেন। ১৯৪২ সালে নেতাজী যখন আজাদ হিন্দ ফৌজ নিয়ে ভারতের দিকে আসছিলেন তখন গান্ধী শেষবার তাঁর নাটুকে আন্দোলন করেছিলেন কংগ্রেস দলটাকে এক নম্বরে রাখার জন্য। এরপর স্বাধীনতার দাবীতে গান্ধী বা কংগ্রেস আর কোনো আন্দোলন করেনি। উলটে ১৯৪৫ সালে ভারতকে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি দেওয়ার পরেও দুবছর ইংরেজদের রেখে দিয়েছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পর ভারতের বড়লাট হলেন মাউন্টব্যাটেন। এই মাউন্টব্যাটেনই নেতাজীর আজাদ হিন্দ বাহিনীকে হারিয়ে নেহেরুর ক্ষমতালাভ নিশ্চিত করেছিলেন। গান্ধী খুন হবার পর থেকে কংগ্রেসের সবকিছুই চালাতেন নেহেরু, আর নেহেরুকে আড়াল থেকে চালাতেন মাউন্টব্যাটেন। ভারতের সংবিধান, আইন, রাজনীতি, বিদেশনীতি সবকিছুই মাউন্টব্যাটেনের মর্জিতে গড়ে উঠেছিল। যারা ইংরেজদের পক্ষে ছিল বাস্তবে তাদেরই হাতে যেন ক্ষমতা থাকে সেটা উনি ব্যবস্থা করে গেছিলেন। তারই ফলে ভারত সরকার এখন জিন্নার দল আর আম্বেদকরের দলের ইচ্ছামতো নাচে।
Leave a Reply