মহম্মদ মারা যাবার পর
লিখেছেন : জুপিটার জয়প্রকাশ (দুপেয়ে গাধ)
৬ বছরের আয়েষা বেবিকে বিয়ে করার জন্য আল্লার আয়াত নামিয়েও আবু বকরকে লাইনে আনা যায়নি। যারা বেশি ইমানদার তাদের সকলেরই এই ব্যাপারটা কান্ডজ্ঞানের উদাহরণ হিসাবে জানা প্রয়োজন। আবুবকরকে খলিফা পদের লোভ দেখিয়ে রাজী করাতে হয়েছিল। মহম্মদের সবচেয়ে প্রিয় চেলাও আল্লার কথায় বেশি ভরসা করত না। কারণ তারাও জানত যে মহম্মদ মাঝেমধ্যেই নিজের দরকার মতো আল্লার নামে আয়াত বের করে।
এই একই লোভ আবার মহম্মদ তার মাথাগরম হাফসা বিবিকেও দেখিয়ে দেখিয়ে বশে রাখত। কিন্তু অন্যদিকে আবার মহম্মদের ভাই এবং জামাই আলী ছিল আরবের আইনকানুন অনুসারে মহম্মদের সঠিক ওয়ারিস।
যদিও ইসলামী ইতিহাসে দাবী করে যে মহম্মদকে বিষ দেওয়া হয়েছিল এবং তাতে চার বছর ভুগেভুগে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু অদ্ভূত ব্যাপার এই যে মহম্মদ সব জেনেও মরার আগে ওয়ারিস নির্বাচন করে দিয়ে যায়নি। বিষ খাওয়ানোর গল্পটা তাই একেবারেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
মহম্মদ মারা যাবার পর তার লাশ সেই ঘরেই ফেলে রেখে রাজত্ব নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়ে যায়। ওমর লোকটি খুব মাথাগরম হলেও আবুবকরের সাথে ভাল বন্ধুত্ব ছিল। তাই ঝামেলাটা হয় আবুবকর আর আলীর মধ্যে। বিবাদের ফয়সালা যখন হয়ে গেল ততদিনে আরব দেশের গরমে মহম্মদের লাশ আধপচা হয়ে পোকা ধরে গেছে। নাড়াচাড়া করাই অসম্ভব। ফলে চুপচাপ সেই ঘরে লাশের পাশেই একটা গর্ত কেটে মাটীচাপা দিয়ে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিলনা।
এদিকে আলীর সাথে আবুবকরের ঘোর শত্রুতা। তাই খলিফা আবুবকর আলির বাসায় একদল সরকারি গুন্ডাকে পাঠিয়ে দিলেন। তারা দরজা ভেঙে আলীকে তুলে নিয়ে এল। আলীর বিবি ওরফে নবীকন্যা ফাতেমা বাধা দেবার চেষ্টা করাতে এমন ভাবে পিটিয়ে দিল যে তিনি এন্তেকাল করলেন। নিজের গর্দান বাঁচাতে অবশেষে আলী কসম খেলেন যে তিনি কখনও খলিফা পদের দাবী করবেন না। এই কসম খাওয়ার পরে আলীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। খলিফা ইয়েজিদ যখন কারবালায় হজরত হোসেনকে ঘেরাও করেছিল সেখানেও একই শর্ত দিয়েছিল, খলিফা হবার দাবী ত্যাগ করলেই নিরাপদে চলে যেতে দেওয়া হবে। কিন্তু হোসেন তাতে রাজী না হয়ে মাথাটি হারিয়েছিলেন।
এইভাবে আলীকে বাতিল করিয়ে আবুবকর নিশ্চিন্ত হলেন। ওমর ভালো বন্ধু, তার থেকে ভয়ের কিছু ছিলনা। কিন্তু রাজত্ব বেশীদিন সইলনা, আবুবকর খুন হয়ে গেলেন। এরপর একে একে খলিফা আসতে লাগল আর খুন হতে থাকল। অবশেষে যখন আর কোনো দাবীদারই রইল না তখন হজরত আলী বাধ্য হয়ে গদিটায় বসলেন। কিন্তু আবুবকরের ছেলের আবার সন্দেহ ছিল যে কসম খেয়ে থাকার কারণে খলিফা পদে দাবীদার হতে না পারলেও খুনগুলো আলী নিজেই করিয়েছে। এইভাবে যখন আর কোনো দাবীদার আসেনি তখন নিজে খলিফা হয়েছে। তাই সে একদিন আলীকেও খতম করে দিল।
Leave a Reply