লিখেছেন : জুপিটার জয়প্রকাশ (দুপেয়ে গাধ)
বাপ আবদুল্লাহ মারা যাবার আড়াই বছর পরে মহম্মদের জন্ম হয়েছিল। এই অবস্থায় লোকে নানারকম কথা কইবে সেই ভয়ে শিশু মহম্মদকে সরিয়ে ফেলা হয়। দূর গ্রামের হালিমা নামক এক মহিলার কাছে মহম্মদকে রেখে আসা হয়েছিল। যখন পড়াশুনা শুরু করার মতো বয়স হল তখন তাকে আবার মক্কায় ফিরিয়ে আনা হল। ততদিনে ইস্যু ঠান্ডা হয়ে গেছে। যদিও মক্কার লোকেরা আড়ালে মহম্মদকে আপনা-আপনি গজানো পাহাড়ি আগাছা বলে উল্লেখ করত। কোরানে অবশ্য মহম্মদকে মুত্তালিবের পুত্র বলা হয়েছে। আল্লার মরজিতে যে যেখানে ইচ্ছা জন্মাতে পারে, সেটা আজকের যুগে তেমন আলোচনার বিষয় নয়। কিন্তু সেই আমলে প্রধান পুরোহিতের বংশধর হলেও মক্কার মন্দির বিম্বা দেবোত্তর সম্পত্তিতে মহম্মদের কোনো আইনি অধিকার ছিল না। প্রধান পুরোহিতের বংশধরদের যেসব বিষয় পড়তে হয়, মহম্মদকে সেগুলো পড়ানো হয়নি। যে কারণে ইসলামের ইতিহাসে মহম্মদকে অশিক্ষিত বলা হয়ে থাকে। নিজবংশের ধর্মের উপর তাই শুরু থেকেই একটু রাগ ছিল।
খাদিজাকে বিয়ে করে ঘরজামাই হবার পর মহম্মদ যখন ব্যবসার কাজে বিদেশে যাওয়া আরম্ভ করল তখন সে দেখল এরকমই বাপের ঠিকানা না পাওয়া যীশুর পিছনে লাখ লাখ লোকে লাইন দিচ্ছে। যেহেতু মক্কার ধর্মে মহম্মদের কোনো ধর্মীয় নেতা হবার সুযোগ ছিলনা তাই আব্রাহামিক ধর্মটা মহম্মদের একটু বেশিই পছন্দ হয়ে গেল। খাদিজার ক্রিশ্চান ভাই নওফেলের কাছে আব্রাহামিক ধর্মের ব্যাপারে পড়াশুনা শুরু করল। মোটামুটি একটা ধারণা গজিয়ে যাবার পর নিজেকে আব্রাহামিক ধর্মের পয়গম্বর বলে দাবী করল। সেই সময়ে নবী-রাসুল-পয়গম্বর হওয়া খুব বিরাট ব্যাপার কিছু ছিল না। যেকোনো বড় শহরেই একাধিক ব্যক্তি পাওয়া যেত যারা কোনো না কোনো দেবতার বাণী নিয়মিত পেয়ে থাকে। এখনও বহুদেবতার দেশ ভারতে কয়েক লাখ এরকম লোক আছে যারা কোনো একটা দেবতার সাথে সরাসরি বাতচিত করার দাবী করে। প্যাগান আরব দেশেও স্বপ্নে কোনো দেবতার আদেশ পাওয়া তখন খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। কেউ অবিশ্বাস করত না।
আজকের দিনেও হাতে একটা ধর্মগুরু থাকলে অনেক কাজের সুবিধা হয়। লোকে সততার প্রতীক বলে ভরসা রাখে। তাই মহম্মদকে আল্লার নবি হিসাবে খাড়া করতে খাদিজা বিবির কোনো আপত্তি ছিল না। খাদিজার আশ্রয়ে খেয়েপরে বেঁচে থাকা নওফেলের কাছে কোনো পথই না থাকায় তিনি মহম্মদকে আল্লার নবি হিসাবে সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। কিন্তু নিজে কখনও মহম্মদের ধর্মটা গ্রহণ করেননি। এর থেকেই যা বুঝবার বোঝা যায়। নওফেল মারা যাবার পর বেশ কিছুদিন আল্লার আয়াত ডাউনলোড বন্ধ ছিল। এরপর মহম্মদ এক ক্রিশ্চান গোলাম ছোকরাকে খুঁজে এনে তাকে নিজের পালিতপুত্র বানালেন। আবার নতুন করে আব্রাহামিক আয়াত নামতে শুরু করল।
শুরুর দিকে মক্কায় মহম্মদের ইসলাম ধর্মটা ছিল সবাইকে খুশি করার চেষ্টা। ইহুদি-ক্রিশ্চানদের নবি হতে গেলে প্যাগানদের কিছুটা সমালোচনা করতেই হয়। তবে খাদিজা জীবিত থাকতে চার বিয়ে, তিন তালাক কিম্বা বিবি পেটানোর ধর্ম প্রচার সম্ভব ছিল না। এরপর চাচা আবু তালেব মারা গেলেন, তাঁর ওয়ারিশরা যা নেবার নিয়ে গেল। মক্কার মন্দিরের সম্পত্তিতে মহম্মদের ভাগ পাবার আশা ফুরিয়ে গেল। খাদিজার মৃত্যুর পর ব্যবসাও আর রইলনা। এদিকে ১২ বছর মক্কায় প্রচার চালিয়েও তেমন ভাল সংখ্যায় চেলা জোটেনি। ফলে প্যাগানদের খুশি রাখার দায় পুরোপুরি বাদ দিয়ে মহম্মদ তাক করল আব্রাহামি জনতাকে। মক্কার প্যাগান জনগণের উপর গালাগালি বাড়িয়ে দিল। মদিনার দিকে নজর ফেরাল আর তাদেরকে খুশি করতে ইহুদি মন্দিরের দিকে নামাজ পড়া আরম্ভ করল। আল্লা কিন্তু একদমই আপত্তি করলনা।
কিন্তু ইহুদিদের মন্দিরকে কেবলা বানিয়েও দেখা গেল তারা মহম্মদকে নবি হিসাবে মানতে রাজি নয়। লড়াই করে জবরদস্তি কিছু ইহুদিকে মুসলিম বানানো গেল। কিছু ডাকাত লুটের মালের লোভে মুসলিম হল। কিন্তু এই সাফল্যের সাথে ইহুদিদের কেবলার দিকে নামাজ পড়ার কোনো সম্পর্ক ছিলনা। মহম্মদ যখন বুঝল এভাবে নাটক করে লাভ নেই। কোনোদিনই ইহুদিদের মন্দিরে তাকে নবি হিসাবে ঢুকতে দেবেনা। তখন আবার মক্কার দিকে ফিরে নামাজ পড়তে আরম্ভ করল।
Leave a Reply