চিন্তা করেন তো কী পরিমান ভালোবাসা থাকলে স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রীও স্বামীর চিতায় আত্মাহুতি দিতে পারে! মহাভারত অনুসারে পাণ্ডুর স্ত্রী মাদ্রী সহমরণে যান। অন্য স্ত্রী কুন্তী যান নি, অর্থাৎ মাদ্রী স্বেছায় যান। অর্থাৎ ধারণা করা যায়, সতীদাহ প্রথা শুরুতে স্বপ্রণোদিত ছিল। কিন্তু পরের দিকে এটা মোটেই স্বপ্রণোদিত ছিল না। মৃতর স্ত্রীকে সহমরণে বাধ্য করা হত। চিন্তা করেন তো কোন ধনী লোক মারা গেল। তার সম্পত্তির লোভে আত্মীয়রা তার স্ত্রীকে ধরে বেঁধে স্বামীর সাথে চিতায় শুইয়ে পুড়িয়ে মারতো। আর তখন বাজানো হত ঢাক-ঢোল যাতে ঢাক-ঢোলের শব্দে তার কান্নার আওয়াজকে চাপা পড়ে যায়।
এবার চিন্তা করেন তো আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলে আকাশ বাতাস কাপিয়ে কুপিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলছেন আপনারই জাত ভাইদের, প্রকাশ্যে জড়ো হয়ে গনধর্ষণ করে ফেলছেন স্বজাতির কোন মা-বোনদের, জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছেন তাদের বসতবাড়ি, ভেঙে ফেলছেন ধর্মীয় উপাসনালয়, তাদের আরাধ্য দেব-দেবীদের মূর্তি। শুধুমাত্র ভিন্ন রাজনৈতিক বা ধর্মীয় মতাদর্শের জন্য। অথচ কয়েক পুরুষ আগে এরাই ছিল আপনার রক্তের সম্পর্কের কাছের কেউ।
এরপর আপনি হয়তো সবার মঙ্গলের জন্য সত্যি সত্যিই আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার রব তুলবেন। তখন কী একবারও এইটা মনে করে আপনার গলা কেঁপে উঠবে না যে এই ধ্বনির আড়ালেই হয়তো অন্য কোথাও চাপা পড়ে যাচ্ছে খুন হয়ে যাওয়া কোন অসহায় ভাইদের ভয়ার্ত চিৎকার, গন-ধর্ষিতা হতে থাকা কোন অসহায় মা-বোনদের হাত জোড় করা মিনতি আর্তনাদ, কিংবা কারো ক্ষমাভিক্ষা?
কাল একটা ভিডিও দেখেছিলাম, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলে দুইটা খ্রিষ্টান মেয়েকে প্রকাশ্য রাস্তায় গনধর্ষণ করার। আজকের এইটা দেখুন, এই সপ্তাহখানেক আগে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে কায়রোর কপটিক খ্রিষ্টানদের চার্চে।
===========================
[আর ধর্ষণের ঘটনাটা ইজিপ্টের। মেয়ে দুইটার সর্বাঙ্গ কাপড়ে ঢাকা। তবুও প্রকাশ্যে নাসারা নাসারা বলে চিৎকার করে সবাই মিলে ঘিরে ধরে। তার পর আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার বলে গ্যাংরেপ করা হয়।
গুটিকয়েক ফান্ডামেন্টালিস্ট শরিয়া আইন শরিয়া আইন বলে চিল্লাচ্ছে। কিন্তু যে সুশিলরা এটাকে আল্লার আইন বলে সমর্থন দিচ্ছেন বা মুখ বুজে আছেন, ভাবছেন মুসলমান বলে আপনাকে কেউ কিছু বলবে না, জেনে রাখুন আমাদের দেশেও বোরখা পড়ে বের হলেও অনেক মেয়ে-মহিলারা ঈভ-টিজিং-এর শিকার হচ্ছে। আর একটু সাহস পেলে ধর্ষণও করে ফেলে। আর এরাই যদি কোন ছল-ছুতা পায় তাহলে যে কাউকে বিধর্মী বলে এমন ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটাবে।
কেউ হয়তো বলবেন শরিয়া আইনে ধর্ষণ করার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু মনে রাখবেন তারা যখন ধর্ষণ করবে, তখন আপনাকে, আপনার মা বোনকে বিধর্মী বলে চালিয়ে দিয়ে তবেই ধর্ষণ করবে। আর একবার ঘটনা ঘটে গেলে শরিয়া আইনে যতই তাদের মৃত্যুদন্ড দিক না কেন, আপনার জীবনের ঐ কালো দাগ কোনদিন দূর হবে না।
একটু ধর্মান্ধ না হয়ে একটু কমনসেন্স নিয়ে ভেবে দেখুন পুরো ব্যাপারটা।]
========================
গনধর্ষণঃ https://www.facebook.com/photo.php?v=351690064931362 ( ইউটিউব লিঙ্ক )
কপটিক মিশরীয়দের নিয়ে ইমন জুবায়ের সামুব্লগঃhttp://www.somewhereinblog.net/blog/benqt60/29705915
আল্লাহ সত্যিই মহান!
(ফেসবুকে দেয়া এপ্রিল ১৫, ২০১৩ তারিখের একটা পুরানো পোস্ট)
Leave a Reply