১. এভারেস্ট বিতর্ক অনেক দিন ধরে চলছে। এর পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ, দাবীদার মুসা ইব্রাহিম যথোপযুক্ত প্রমাণ হাজির করতে ব্যর্থ, কিংবা যেগুলা হাজির করেছেন–সেগুলো যঠেষ্ট নয় এবং তথ্যে অনেক ফাঁকফোকর। এছাড়া দাবীদার নিজেই স্বীকার করেছেন যে তিনি আগে একাধিকবার ভূয়া সার্টিফিকেট ব্যবহার করেছেন এবং মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই সাথে তার সহযোগীদের বিরুদ্ধেও একাধিকবার ফটোশপ করে ছবি ছাপানোর প্রমাণ রয়েছে। তাই এদের সব কথা নিঃসন্দেহে মেনে নেয়া কোনো যুক্তিবাদী মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
২. এভারেস্ট বিতর্ক এবার অনেকটা কেলেংকারী পর্যায়ে রূপ নিয়েছে যখন খোদ নেপাল মাউনটেইনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন এভারেস্ট বিজয়ের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থে প্রতিটা দেশ থেকে প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী নারী-পুরুষদের তালিকায় আমাদের দেশের হয়ে প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহিমের নাম রাখেনি।
ব্যাপারটা আমাদের দেশের জন্য অপমানের। দেশের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে এই খবরটি প্রচার করে অনেকের বিরুদ্ধভাজন হয়েছে। অথচ এত বড় একটি খবরটি তুলে ধরার জন্য তাদের ধন্যবাদই প্রাপ্য ছিল বলে আমার ব্যক্তিগত মত।
৩. নেপাল মাউনটেইনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন কেন আমাদের প্রথম বিজয়ীর নাম তাদের লিস্টে রাখেনি, সেই প্রশ্ন না তুলে আমরা প্রশ্ন তুলছি সংবাদ মাধ্যম কেন সেটা সবার গোচরে আনছে! ব্যাপারটা ফানি মনে হয়েছে।
আচ্ছা, এবার যখন ব্যাপারটা উঠেছে তখন কালকের অন্যান্য এভারেস্ট বিজয়ীদের সুরে সুর মিলিয়ে বলতে চাই–ব্যাপারটা আমাদের সবার জন্য লজ্জার এবং দুঃখজনক। আগে মুসা ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে যতই মিথ্যা দাবীর অভিযোগ থাকুক না কেন, আশা করি এভারেস্টের ব্যাপারে তিনি তার দাবীর পক্ষে সব তথ্য-প্রমাণ হাজির করবেন এবং নেপাল মাউনটেইনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন যদি ভুল করে থাকে তবে তারাও সেটা সংশোধন করে বাংলাদেশের প্রথম পুরুষ এভারেস্ট বিজয়ী হিসাবে মুসা ইব্রাহিমের নাম স্মারকগ্রন্থে সংযুক্ত করবে।
৪. প্যাটের তাগিদে খাবার জোগানো আর চেটের তাগিদে বিয়ানো–এর বাইরে নিজের জন্য কে কী করেন?
৫. পেটের তাগিদে বাড়ি থেকে মুরগির ফার্মে এবং বাজারে বা মাঝে মাঝে ডেলিভারি দেয়ার থাকলে কাস্টমারদের কাছে দৌড়াদৌড়ি করতে হলেও আমি অনেকটাই ঘরকুনো টাইপের। যদিও নিজের কিছু হাবিজাবি শখ আছে–কিন্তু সেগুলোও এই আলসে টাইপের শখ।
এই চলমান এভারেস্ট বিতর্ক আমার এই ঘরকুনো স্বভাবে একটা বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে। প্যাট আর চ্যাটের বাইরেও নিজের জন্য কিছু করার কেমন যেন একটা অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। বাইরের জগতটাকে ঘুরে ঘুরে দেখতে ইচ্ছে করছে।
এখানে একটু ধর্মকে টেনে আনি–সঙ্গত কারণেই। আশা করি কেউ কিছু মনে করবেন না। বলছি–ছোটবেলায় এই ধর্মটাই চিন্তাভাবনা এবং চলাফেরার গণ্ডিটাকে অনেক ছোট করে দিয়েছিল। কোথাও যাওয়া যাবে না, কিছু বলা যাবে না, কিছু করা যাবে না–এরকম হাজারো নিষিদ্ধ কথা। মূলত আমার গণ্ডিটা এই কারণেই ছোট হয়ে গেছে।
যা বলছিলাম–এভারেস্ট বিতর্ক–অভিযাত্রীদের কথা শুনছি, তাদের ব্যাপারে জানছি, আর মনটা নানান অভিযানে মেতে উঠতে চাইছে। একান্তই নিজের জন্য। আরো জানতে ইচ্ছে করছে–শুরুটা কিভাবে হয়, টাকা-পয়সা কেমন লাগে, শারীরিক ফিটনেস কেমন হতে হয়, ইত্যাদি ইত্যাদি। কি জানি–মনে আরেকটু ধাক্কা লাগলে হয়তো বেড়িয়েও পড়ব…
Leave a Reply