[আকাশ-মিতু এবং পরকীয়া ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে দেয়া পোস্ট।]
নারীবাদ – নারী-পুরুষের সাম্য ও সমান অধিকার। একজন পুরুষের খাদ্যে বস্ত্রে বাসস্থানে শিক্ষায় চিকিৎসায় অধিকার থাকলে একজন নারীর খাদ্যে বস্ত্রে বাসস্থানে শিক্ষায় চিকিৎসায় পুরুষের সমান অধিকার থাকবে। অর্থাৎ নারী হওয়ার কারণে কেউ বৈষম্যের শিকার হতে পারবে না।
আরো আছে–ধরেন–পুরুষ যদি একাধিক বিয়ে করতে পারে, তাহলে চাইলে নারীরাও একাধিক বিয়ে করতে পারবে; পুরুষ যদি পরকীয়া করতে পারে, তাহলে চাইলে নারীরাও পরকীয়া করতে পারবে; পুরুষ যদি বহুগামি হতে পারে, তাহলে চাইলে নারীরাও বহুগামী হতে পারে, পুরুষ যদি রাতবিরাতে ঘরের বাইরে বের হতে পারে, তাহলে চাইলে নারীরাও রাতবিরাতে ঘরের বাইরে বের হতে পারবে, পুরুষ যদি খুন করতে পারে, তাহলে চাইলে নারীরাও খুন করতে পারবে, পুরুষ যদি ধর্ষণ করতে পারে, তাহলে চাইলে নারীরাও ধর্ষণ করতে পারবে… [এভাবে সিগারেট খাওয়া, ড্রিঙ্ক করা, গাড়ি চালানো, চাকরি করা থেকে শুরু করে (এমনকি) দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করাটাকেও উদাহরণ হিসাবে দেখানো যেতে পারে।] অর্থাৎ শুধু নারী হওয়ার কারণে নারীরা পুরুষের মতো কিছু করতে পারবে না, বা কোনো কাজ পুরুষেরা পারবে, কিন্তু শুধুমাত্র নারী হওয়ার কারণে নারীরা পারবে না–এরকম পক্ষপাত বা বৈষম্যমূলক আচরণ কারো কাছ থেকে কাম্য নয়।
(নারী বাচ্চার জন্ম দিতে পারে, পুরুষেরা পারে না–অতএব পুরুষেরা নারীর সমান অধিকার পাবে না; পুরুষের বীর্য আছে, নারীর বীর্য নাই–অতএব নারীরা পুরুষের সমান অধিকার পাবে না–অধিকারের প্রশ্নে এ ধরনের “সামর্থ” বা “যোগ্যতা” টেনে আনা স্রেফ এঁড়ে তর্ক…)
২) সাম্যবাদ। উপরের কথাগুলোতে ‘নারী-পুরুষের’ জায়গায় “মানুষে-মানুষে” বা “ধনী-গরীবে” বা “সবল-দুর্বলে” ইত্যাদি বসিয়ে নিয়ে দেখতে পারেন।
“গাহি সাম্যের গান…”–নজরুলের এই সাম্যের গান, এই সাম্য বুঝতে পারলে সমান অধিকার জিনিসটাও বুঝতে পারার কথা। সমান অধিকার জিনিসটা বুঝতে পারলে নারীবাদ বুঝতে পারার কথা, নারীবাদ বুঝতে পারলে সাম্যবাদও বুঝতে পারার কথা। বুঝতে চাইলে সহজ, না বুঝতে চাইলে কেউ বোঝাতে পারবে না। এ নিয়ে কারো সাথে তর্ক করাও এখন অহেতুক মনে হয়। তর্ক বা জোর করে যেমন কাউকে আস্তিক থেকে নাস্তিক বানানো যায় না, তেমনি নারীবাদ-সাম্যবাদ জিনিসগুলো হয়তো শোনানো বা পড়ানো যেতে পারে, কিন্তু নারীবাদী-সাম্যবাদী বানানো সম্ভব না। এগুলা যার যার শিক্ষা ও উপলব্দির মাধ্যমে একান্তই নিজের ভেতরে জন্ম নেয়।
=============
[একাধিক বিয়ে করা, পরকীয়া করা, বহুগামী হওয়া, সিগারেট খাওয়া, ড্রিঙ্ক করা, রাতে ঘরের বাইরে বের হওয়া, দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা, খুন করা, ধর্ষণ করা, ইত্যাদি ইত্যাদি “ভালো” না কি “খারাপ”–সেটা একেবারেই ভিন্ন তর্ক… কোনো কিছু ভালো হলে সেটা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য ভালো; খারাপ হলে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য খারাপ… এই ভালো বা মন্দের সাথে নারীবাদের বা সাম্যবাদের কোনো সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না।]
Leave a Reply